নওগাঁর মান্দা উপজেলার চককসবা বিলের ৩২০ একর সরকারি সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে ঐ এলাকার কয়েক প্রভাবশালী। খননযন্ত্রের সাহায্যে রাতের অন্ধকারে বিলের নিচু এলাকায় খণ্ড খণ্ড বাঁধ দিয়ে কুয়া খনন করা হয়েছে। এতে রুটি-রুজি বন্ধের উপক্রম হয়েছে বিলের চারপাশের ১৩ গ্রামের জেলে পরিবারে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বিলের ভেতর দিয়ে উঁচু এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি খাল রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে ছোটমুল্লুক, বড়মুল্লুক, দোডাঙ্গী, চকদেবীরাম, কালিগ্রামসহ কয়েকটি বিলের পানি এই খাল দিয়ে নিচু এলাকায় চলে যায়। শুকনো মৌসুমে খালের পানি ব্যবহার করে বিলে বোরো ধানের চাষ করেন কৃষকেরা।
তাঁদের অভিযোগ, খালের মুখ বন্ধ করে দেওয়ায় উঁচু এলাকার বিলগুলোর পানি আর নিষ্কাশন হতে পারবে না। জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে ওইসব বিলের তিন ফসলি জমিতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হবে। সরকারি সম্পত্তি দখল হয়ে যাওয়ায় জেলে পরিবারগুলোতে নেমে এসেছে দুর্দিন।
এদিকে চককসবা বিলের সরকারি সম্পত্তি দখলের বিষয়ে গত ২৫ মে বৃহস্পতিবার উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা মাসিক সভার সভাপতি ইউএনওর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তব্য দেন কালিকাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বাবু ও তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান কামরুল। তারা বলেন, বিলে মাছ শিকার করতে না পারলে ১৩ গ্রামের অন্তত তিন হাজার জেলে পরিবার পথে বসে যাবে।
নলতৈড় গ্রামের মৎস্যজীবী মাহবুব আলম, রাজু আহম্মেদ, দুলাল হোসেন সহ আরো অনেক মৎস্যজীবীরা বলেন, ‘বসতভিটা ছাড়া আমাদের কোনো ফসলি জমি নেই। বছরের অন্তত ৮ মাস বিলে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। অন্য সময়ে শ্রমিকের কাজ করতে হয়। বিলটি দখল হয়ে যাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছি আমরা।
চককসবা বিল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, বিলটি বেদখল হলে গেলে তাতে আর মাছ শিকার করতে পাবরে না জেলেরা। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা পথে বসবেন। জেলেদের জীবন জীবিকার স্বার্থে বিলটি দখলমুক্ত করার দাবি করেন তিনি।
এই বিষয়ে অভিযুক্ত দখলদারদের মধ্যে মুহাম্মাদ আলী,মোজাফফর হোসেন, একরামুল হক সহ কয়েক জন দখলদারেরা বলেন,সরকার যদি চায় তাহলে আমরা সরকারি জায়গা ছেড়ে দিবো।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, চককসবা বিলে সরকারি সম্পত্তি দখলের বিষয়টি রেজুলেশনে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। সরজমিনে তদন্ত করে বিলটি দখলমুক্ত করতে খুব শিগগিরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।