ব্রেকিং নিউজ :
রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের স্মার্ট কার্ড প্রদানের সুপারিশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয় স্থায়ী কমিটি এভিয়েশন শিল্পের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল দিতে সরকার নতুন প্রযুক্তি নিয়ে আসছে : শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডেপুটি স্পিকারের সঙ্গে চীনের প্রাদেশিক কংগ্রেসের ভাইস চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎ নির্মাণাধীন ভবনে লার্ভা পেলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করা হবে : মেয়র তাপস বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে মরিশাসের প্রতি আহ্বান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা কক্সবাজারে ভোটার তালিকায় থাকা রোহিঙ্গাদের তালিকা চেয়ে হাইকোর্ট আদেশ মন্ত্রী-এমপি’র স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের
  • প্রকাশিত : ২০২২-১১-১১
  • ৪১৭ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

সিলেটে শ্রদ্ধা ভালোবাসায় মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বিশ্ব বরেণ্য কূটনীতিক সাবেক রাষ্ট্রদূত, জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার, মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ৯৪ তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১০ নভেম্বর এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসে বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বাঙালির পক্ষে কূটনৈতিক যুদ্ধের মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক স্পিকার মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী’র ৯৪তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে দেয়া বাণীতে মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে আজ শুক্রবার স্পিকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরীর ৯৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মরহুমের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও রক্তদান কর্মসূচী পালন করেছে ‘স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ’। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সাংসদ ও সিলেট জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ ও বিভন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সকাল সাড়ে ৯ টায় সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহঃ) দরগাহ মাজার সংলগ্ন গোরস্থানে মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে সকাল ১০ টায় চৌহাট্টাস্থ সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে স্মৃতি পরিষদ। সেখানে স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন জুয়েল আহমদ নুরুজ্জামান, সিরাজুল ইসলাম মিরাজ, নসু ভৌমিক, রনবীর দাস রনি, মোসাদ্দেক মুসাসহ প্রমুখ।
এসকল কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, ‘স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ’ সিলেট জেলা শাখার আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন ও যুগ্ম-আহ্বায়ক ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, স্মৃতি পরিষদের সিলেট জেলা শাখার সদস্য সচিব মাহবুবুল হাফিজ চৌধুরী মুশফিক, সদস্য জনাব ফয়সাল মাহমুদ (অতিরিক্ত ডি আই জি), সদস্য কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, আব্দুল আজিম জুনেল, আব্দুর রব হাজারী, সৈয়দ আনোয়ারুস সাদাত, সোয়েব বাছিত, আব্দুল কাইয়ুম জুয়েল, মো. ফাহিম আহমদ, রায়হান রনি প্রমুখ।
বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর জন্ম ১৯২৮ সালের ১১ নভেম্বর সিলেট শহরের দরগা গেইটস্থ রশিদ মঞ্জিলে। তার পিতা আব্দুর রশীদ চৌধুরী ছিলেন অবিভক্ত ভারতের কেন্দ্রীয় বিধান সভার সদস্য এবং মাতা সিরাজুন নেছা চৌধুরী ছিলেন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী একটি রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হিসেবে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি সচেতন ছিলেন।
হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার হাই মাদ্রাসা সেকশনে প্রাথমিক শিক্ষা ও আসামে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করে ১৯৪৭ সালে ভারতের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি ইংলিশ বারে অধ্যয়ন করেন এবং লন্ডনের ইনার টেম্পলের একজন সদস্য হন। লন্ডনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠান থেকে ডিপ্লোমা ডিগ্রি তিনি অর্জন করেন। এছাড়া ম্যাসাচুসেটসের ফ্লেচার স্কুল অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোম্যাসি থেকে স্নাতক ডিগ্রিও অর্জন করেছিলেন তিনি।
১৯৫৩ সালে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী তৎকালীন পাকিস্তানের বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগে যোগদানের মাধ্যমে কর্ম জীবন শুরু করেন। ১৯৭১ সালে জাতির পিতার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে নয়াদিল্লীস্থ পাকিস্তান দূতাবাস ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এবং সাফল্যের সাথে বাংলাদেশ মিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সরকারি কর্মচারিদের দুই বছরের জ্েযষ্ঠতা দেন। সে হিসেবে মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ১৯৫১ ব্যাচের ফরেন সার্ভিসের অফিসার হিসেবে জ্েযষ্ঠতা পান। পরবর্তীকালে তিনি বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৭৬ সালের পর সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া এবং ভ্যাটিকানেও একই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আইএইএ এবং জাতিসংঘের শিল্পাঞ্চল উন্নয়ন সংস্থা বা ইউনিডো’র প্রথম স্থায়ী প্রতিনিধি তিনি ছিলেন । ১৯৮৫ সালের ৩ জুলাই তিনি জাতিসংঘের ৪১তম সাধারণ পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৭৫ সালে স্বাধীনতা বিরোধীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী তার জার্মানীর বাসায় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, জামাতা ড. ওয়াজেদ ও দুই নাতি-নাতনিকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তার অনুরোধে জার্মান সরকার তার বাসার সামনে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিলেন।
১৯৮৬ সালে তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৪১তম অধিবেশনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী সিলেট-১ আসন (সদর-কোম্পানীগঞ্জ) থেকে ১৯৮৬ সালে ৩য় সংসদ ১৯৮৮ সালে ৪র্থ সংসদ এবং ১৯৯৬ সালে ৭ম সংসদ নির্বাচনে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের ১৪ জুলাই তিনি সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় সংসদের স্পিকার নির্বাচিত হন এবং আমৃত্যু তিনি এ পদে বহাল ছিলেন।
২০০১ সালের ১০ জুলাই তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। মত্যুর পর সিলেট অন্তঃপ্রাণ এই বরেণ্য রাজনীতিবিদ, কূটনীতিককে সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
#
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat